News Details
নামঃ বুলবুল চৌধুরী, ভালো নাম- আবদুর রশীদ চৌধুরী। ডাক নাম- টুনু। ছদ্মনাম- অজয় কুমার। ১৯১৯ সালের ১ জানুয়ারি এক শুভ সকালে বগুড়া জেলায় তাঁর জন্ম। পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া (বর্তমান লোহাগাড়া) থানার চুনতি গ্রামে। বাবা- মোহাম্মদ আজমুল্লাহ চৌধুরী। মা- মাহফুজা খাতুন। তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনই সবার বড়। ১৯৩৪ সালে টুনু মানিকগঞ্জ হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ভারতবর্ষের সেরা কলেজ প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৩৮ সালে স্কটিশ কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। তিনি একাধারে চিত্রশিল্পী, কথাশিল্পী, অভিনেতা ও সর্বোপরি নৃত্যশিল্পী ছিলেন। তিনি ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও নৃত্যনাট্য রচনা করেছেন। তাঁর নৃত্যনাট্য গুলোর মধ্যে ব্রজবিলাস, শিব ও দেবদাসী, আনারকলি, সোহরাব রুস্তম, হাফিজের স্বপ্ন, কুইট ইণ্ডিয়া, ভারত ছাড়ো, দেশ প্রেমিক, শহীদের ডাক, সাঁওতালী নৃত্য, নবাণ্ণ নৃত্য, ফসল উৎসব নৃত্য, সাঁপুড়ে, মালকোষ, মেঘদূত, স্বপ্ন বিলাস, বসন্ত বাহার, ফিসারম্যান, ড্রিম এন্ড ফ্যান্টাসি, ডেথ এন্ড বিউটি, লেট্স উই ফরগেট, ইনস্পিরেশণ ইত্যাদি অসংখ্য নৃত্যনাট্য উল্লেখযোগ্য। বুলবুল তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল নিয়ে দেশ বিদেশে অসংখ্য নৃত্যানুশ্ঠান করেছেন এবং সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি চোরাবালি ও নীলদর্পণ নাটকে এবং কৃষাণ ছয়াছবিতে অভিনয় করে ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেন। তদকালিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান তাকে “স্পিরিট অব পাকিস্তান” এবং সংবাদপত্র সমূহ তাকে “স্টার অব পাকিস্তান”, “নাইটৎঙ্গেল অব পাকিস্তান” ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করেন। ১৯৪৩ সালে কলকাতার ১১২ নং স্ট্রিটে বুলবুল চৌধুরী প্রতিভা মোদক নামে এক বাঙালি খ্রিস্টান মেয়েকে বিয়ে করেন। তবে বিয়ের পুর্বে প্রতিভা ইসলামধর্ম গ্রহন করেন এবং বিয়ের পর তাঁর নাম রাখা হয় আফরোজা বুলবুল। মাত্র ১১ বছরের সংসার জীবনে তিনি ২ টি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তানের জনক। বুলবুল চৌধুরীর বোন সুলতানা রাহমান একবার তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আচ্ছা ভাইয়া তুমি নিজের আসল নামে পরিচিত না হয়ে বুলবুল নামে কেন পরিচিত হও?” জবাবে তিনি বলেছিলেন “নজরুলের প্রান-প্রতিম বুলবুলকে আমার মধ্যে বাঁচিয়ে রাখবো বলে”। জগৎ বিখ্যাত এই শিল্পি মরনঘাতি ক্যান্সার এ আক্রান্ত হয়ে মাত্র পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে ১৯৫৪ সালের ১৭ মে ১৩ই রমজান ভোর ৬ টা ১৪ মিনিটে পরলোক গমন করেন। (সংক্ষেপিত)